• বুধবার ২৭শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ ১২ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

    শিরোনাম

    স্বপ্নচাষ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন  
    বাজারে সরবরাহ বাড়লেও কমেনি দাম

    জমজমাট আমের রাজধানী রাজশাহী

    স্বপ্নচাষ ডেস্ক

    ০৪ জুন ২০২৩ ৬:০৯ অপরাহ্ণ

    জমজমাট আমের রাজধানী রাজশাহী

    ম্যাংগো ক্যালেন্ডার অনুসারে প্রায় দুই সপ্তাহ আগে আম আসলেও গত দুই-তিন দিন ধরে সরবরাহ বেড়ে জমে উঠেছে আমের রাজধানী রাজশাহী। ভরা মৌসুম হওয়ায় এখন হাট-বাজারসহ অলিতে-গলিতেও বিক্রি হচ্ছে আম। বিভিন্ন বাগানে থাকা নানান জাতের আম প্রতিদিনই নামানো হচ্ছে। এতে আমের সরবরাহ বেড়েছে, তবে দাম কমেনি।

    সম্প্রতি রাজশাহীর সবচেয়ে বড় আমের হাট বানেশ্বর বাজার ঘুরে দেখা যায়, এবার মধ্য জ্যৈষ্ঠ মাসে পরিপক্ব হওয়ায় একটু দেরিতে বাজারে গোপালভোগসহ বেশ কয়েক জাতের আম পাওয়া যাচ্ছে। বিভিন্ন বাগানে থাকা নানান জাতের আম প্রতিদিনই ভোর থেকে বিকেল পর্যন্ত নামানো হচ্ছে, যা স্থানীয় হাট-বাজারের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাচ্ছে। এমনকি বিদেশেও যাচ্ছে বরেন্দ্র অঞ্চলের সুমিষ্ট আম। যদিও বৃষ্টি কম হওয়ায় তীব্র খরার কবলে পড়ে এবার রাজশাহীর আমের আকার ছোট হয়েছে। তবে স্বাদ ও গুণ অটুট থাকায় চাহিদা কমেনি। এমনকি সরবরাহ বাড়লেও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে এই আম। আমের এই বাড়তি দাম নিয়ে অস্বস্তিতে আছেন সাধারণ ক্রেতা ও ভোক্তারা।

    জানা যায়, বর্তমানে আকারভেদে গোপালভোগ আম ২৪০০ (ছোট), ২৬০০ (মাঝারি) এবং ২৮০০০ (বড়) টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া সদ্য বাজারে আসা হিমসাগর (ক্ষীরসাপাত) আম বিক্রি হচ্ছে ২৪০০ থেকে ২৬০০ টাকা মণ দরে। এই হাটে কম মিষ্টির লক্ষ্মণভোগ বা লকনা আম ১৫০০ টাকা থেকে ১৮০০ টাকা ও রানিপছন্দ আম ২০০০ থেকে ২২০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মৌসুমের প্রথম নামা গুটি এবং গত সপ্তাহ থেকে বাজারে আসা তোতাপুরিসহ বিভিন্ন বনেদি জাতের আমের দাম ১৫০০ থেকে ১৮০০ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হচ্ছে।

    আফাজ উদ্দিন মোল্লা নামে একজন আম চাষি ও ব্যবসায়ী বলেন, এবার জেলা প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময়েরও অনেক পরে বাগান থেকে সবাই আম নামাচ্ছেন। এবার মৌসুমের শুরুতে প্রচুর পরিমাণ মুকুল আসায় বাগানগুলো এখনও কাঁচা-পাকা আমে ঠাসা। তাই রাজশাহী জেলার অধিকাংশ বাগানে ঝুলছে গোপালভোগ, ল্যাংড়া, ফজলি, ক্ষীরসাপাত (হিমসাগর), রানিপছন্দ ও লক্ষ্মণভোগসহ হরেক জাতের সুস্বাদু সব আম। পর্যায়ক্রমে আমগুলো বাজারে উঠতে শুরু করেছে।

    বানেশ্বর হাটের আম ব্যবসায়ী শামীম মিয়া জানান, আমের দাম প্রতিদিনই বাড়ে। সাধারণত জাতভেদে আম ওঠার পর সেই আম শেষ হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে ১০০ থেকে মণ প্রতি ২০০ টাকা করে বাড়ে। আর মৌসুমের শেষ হয়ে আসলে আমের সরবরাহ কমতে থাকে। তখন দুই দিন পর পর এক লাফে মণ প্রতি আমের দাম ৫০০ টাকা পর্যন্ত বাড়ে। তাই আমের দাম এখন আর কমবে না। বরং বাড়তেই থাকবে।

    আব্দুর রহিম নামে এক ক্রেতা বলেন, আগের বছরের তুলনায় আমের দাম এবার অনেক বেশি। ঢাকায় থাকা আত্মীয়-স্বজনদের কাছে আম পাঠাতে হবে। ভেবেছিলাম সরবারহ বাড়লে দাম কমবে। কিন্ত বর্তমানে বাজারে আমের ক্রেতাও বেশি, চাহিদাও বেশ। ফলে দাম চড়া।

    এছাড়া ফেসবুকসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে আম বিক্রি হচ্ছে আরও বেশি দামে। ফলে অনলাইনে মৌসুমি ফলের ব্যবসায় নেমেছেন অনেকে। তারা বাগান থেকে নানা জাতের ফল সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করছেন।

    জানতে চাইলে অনলাইনে মৌসুমি ফল ব্যবসায়ী রাশিদুল ইসলাম রাসেল বলেন, আমার বাড়ি রাজশাহীতে হওয়ায় আম সর্ম্পকে ছোটবেলা থেকে ধারণা ছিল। ফলে আমার অনলাইন ম্যাংগো শপ নামে ফেসবুক পেজের মাধ্যমে অর্ডান নিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে আম পৌঁছে দিচ্ছি।

    শুধু রাশিদুল নন, তার মতো অনেকেই এখন অনলাইনে আমের ব্যবসা করছেন। রাজশাহীতে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে আম বিক্রির এই অনলাইন প্ল্যাটফর্ম।

    জানা যায়, অনলাইনের বাজারে এই মুহূর্তে হিমসাগর আম ৮০ থেকে ১০০ টাকা, গোবিন্দভোগ আম ৬০ থেকে ৮০ টাকা, গুটি আম ৬০ থেকে ৮০ টাকা, ল্যাংড়া আম ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

    গত ৩ মে দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলার আম সংগ্রহ, পরিবহন, বিপণন ও বাজারজাত মনিটরিং সভায় ‘ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার’ প্রকাশ করা হয়। ওই সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গত ৪ মে থেকে গুটি আম বাজারজাত করা হচ্ছে। গোপালভোগ ১৫ মে, লক্ষণভোগ ও রানি পছন্দ ২০ মে, হিমসাগর ২৫ মে, ৬ জুন থেকে ল্যাংড়া, ১৫ জুন থেকে ফজলি, ১০ জুন আম্রপালি এবং ১০ জুলাই থেকে আশ্বিনা ও বারি-৪, ১০ জুলাই থেকে গৌড়মতি ও ২০ আগস্ট ইলামতি আম বাজারজাত শুরু হবে। আর কাটিমন ও বারি-১১ সারা বছরই বাজারজাত করা যাবে বলে জানানো হয়।

    রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ডিডি) মোজদার হোসেন বলেন, রাজশাহীতে এবার ১৯ হাজার ৫৭৮ হেক্টর জমিতে প্রায় ৩৩ লাখ ৬৩ হাজার ৯৮৬টি আমগাছ আছে। এবার জেলায় ৯৫ শতাংশ গাছে মুকুল এসেছিল। গেল বছর ১৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে আমবাগান ছিল। এবার বাগান বেড়েছে এক হাজার ৬৩ হেক্টর জমিতে।

    তিনি আরও বলেন, এবার হেক্টর প্রতি ১৩ দশমিক ২০ টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে জেলায় এ বছর মোট দুই লাখ ৫৮ হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়। এবার রাজশাহীতে এক হাজার ৫শ কোটি টাকার আম বাণিজ্য হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

    স্বপ্নচাষ/একে

    Facebook Comments Box
    স্বপ্নচাষ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন  

    বাংলাদেশ সময়: ৬:০৯ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৪ জুন ২০২৩

    swapnochash24.com |

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
     
    ১০১১১২১৩১৪১৫
    ১৬১৭১৮১৯২০২১২২
    ২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
    ৩০  
    advertisement

    সম্পাদক : এনায়েত করিম

    প্রধান কার্যালয় : ৫৩০ (২য় তলা), দড়িখরবোনা, উপশহর মোড়, রাজশাহী-৬২০২
    ফোন : ০১৫৫৮১৪৫৫২৪ email : sopnochas24@gmail.com

    ©- 2023 স্বপ্নচাষ.কম কর্তৃক সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত।