রাজশাহীর তানোর উপজেলার করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত তিন ব্যক্তির কোনো উপসর্গ পরিলক্ষিত হয়নি। এতে সাধারণ মানুষ ও চিকিৎসকদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। আক্রান্তদের তিনজনই যুবক। গত দুই সপ্তাহে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ও আইইডিসিআর নমুনা পরীক্ষায় তাদের করোনা পজেটিভ আসে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকায় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় গত ৪ মে তানোর থানার একজন কনস্টেবল ও একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মীর করোনা পজিটিভ আসে।
এর আগে গত ২৮ এপ্রিল তানোরে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয় উপজেলার বাঁধাইড় ইউনিয়নের হাঁপানিয়া গ্রামের ব্রাহ্মণবাড়িয়া আখাউড়া ফেরত ১৮ বছর বয়সী এক যুবকের শরীরে। তবে তানোর উপজেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত তিনজনেরই তেমন উপসর্গ ছিল না।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, তানোর উপজেলায় বাঁধাইড় ইউনিয়নের হাঁপানিয়া গ্রামের এক যুবকের প্রথম প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়। ঢাকায় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় গত ২৮ এপ্রিল তার করোনা পজিটিভ আসে।
গত ২০ এপ্রিল আক্রান্ত ওই যুবক ও তার বড় ভাই কুমিল্লা হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আখাউড়া সীমান্ত এলাকা থেকে ফিরে হোম কোয়ারেনটাইনে ছিলেন। সেখানে তারা রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। তবে ২২ এপ্রিল মানসিক সন্দেহের জেরে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান তারা দুই ভাই।
পরে তাদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) ল্যাবে পাঠানো হলে ওই দুই ভাইয়ের মধ্যে ছোট ভাইয়ের করোনা পজিটিভ আসার তথ্য জানান জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়। পরে আক্রান্ত ওই যুবককে নিজ বাড়িতে কোয়ারেনটাইনে রেখে প্রয়োজনীয় খাবার ও চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে, আক্রান্ত তানোর থানার ওই কনস্টেবল ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী থানা চত্বরে কর্মরত ছিলেন। কীভাবে এই দুজনের শরীরে কোভিড-১৯ পজেটিভ আসলো সেটি নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না, কেননা কারোরই তেমন কোনো উপসর্গ দেখা যায়নি। বর্তমানে তারা দু’জনই রাজশাহী পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে আইসোলেশনে সুস্থ্য আছেন।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হাঁপারিয়া গ্রামের ওই যুবক বলেন, আমি ও আমার বড় ভাই কুমিল্লা হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আখাউড়া সীমান্ত এলাকায় রাজমিস্ত্রী কাজ শেষে বাড়ি ফিরে হোম কোয়ারেনটাইনে ছিলেন। তবে ২২ এপ্রিল মানসিক সন্দেহের জেরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যায়। এ সময় চিকিৎসক আমাদের নমুনা সংগ্রহ করে। দু’দিন পর শুনছি আমার করোনা হয়েছে।
আক্রান্ত থানার কনস্টেবল ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী মুঠোফোনে গণমাধ্যমকে জানান, ওসি সাহেবের নির্দেশে থানার আমরা কয়েকজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে নমুনা দিয়ে আসি। একদিন পর জানতে পারি আমরা করোনায় আক্রান্ত। কিন্তু জেলা পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে আইসোলেশনে থাকলেও তাদের শরীরে এখন কোনো সমস্যা নেই বলেও তারা জানান।
তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রোজীয়ারা খাতুন বলেন, এ ধরনের আক্রান্ত ব্যক্তিরা স্বাভাবিক কাজকর্ম সব করতে পারেন। অস্বস্তিবোধ না হওয়ায় সহজে করোনা পজেটিভ মানতে চান না। উপসর্গহীন রোগীরা বেশী ঝুঁকিপূর্ণ। তাদের দ্বারা সংক্রমণের ঝুঁকি বহুমাত্রায় বেড়ে যায়।
উপজেলা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, আজ (৮ মে শুক্রবার) দুপুর পর্যন্ত তিনজন করোনা পজিটিভ আসার বিষয়টি অবগত হয়েছি। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের আইসোলেশনে পাঠানোও হয়েছে। বর্তমানে তারা তিনজনই সুস্থ্য আছেন।
একই সাথে আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসাদের চিহ্নিত করে পর্যায়ক্রমে তাদের নমুনাও সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হবে বলে তিনি জানান।
স্বপ্নচাষ/আরএস
বাংলাদেশ সময়: ৪:৪০ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ০৯ মে ২০২০
swapnochash24.com | sopnochas24
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ||||||
২ | ৩ | ৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ |
৯ | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ |
১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ |
২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ |
৩০ | ৩১ |