রাজশাহী-১ ( তানোর-গোদাগাড়ী ) আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীর ভাতিজা পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে সরকারি চাকরি দেয়ার নামে প্রতারণ করে প্রায় তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে নাহিদুজ্জামান পাপ্পু ও তার স্ত্রী বাঁধনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে গ্রেপ্তারের পর বুধবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়।
গ্রেপ্তার নাহিদুজ্জামান পাপ্পু সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীর মালিকানাধীন শপিং মল থিম ওমর প্লাজার প্রশাসনিক কর্তকর্তা বলে জানা গেছে।
এর আগে, নাহিদুজ্জামান পাপ্পুর প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগী আট যুবক গত মঙ্গলবার রাতে বাদী হয়ে নগরীর বোয়ালিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যেখানে পাপ্পুর স্ত্রী বাঁধনকেও আসামি করা হয়। সেই মামলায় তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে জনরোষ থেকে পাপ্পু ও তার স্ত্রী বাঁধনকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেয় বোয়ালিয়া থানা পুলিশ। পরে রাতেই ভুক্তভোগী শালবাগান এলাকার ইমনসহ ৮জন বাদী হয়ে প্রতারণার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে দুপুরে পাপ্পু ও তার স্ত্রীকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়।
পাপ্পু কতজন যুবককে চাকরি দেয়ার নামে টাকা নিয়েছে সেটি জানার জন্য রিমাণ্ড আবেদন করা হবে বলেও জানান তিনি।
এর আগে, নাহিদুজ্জামান পাপ্পু এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর শপিংমল থিম ওমর প্লাজার প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসাবে কাজ করতেন। তার বাড়ি নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকায়। তিনি নগরীর সুপুরা ম্যাচ ফ্যাক্টারির সামনে ফ্লাট কিনে সেখানে বসবাস করেন।
প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগী ৩০-৪০ জন যুবক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা মঙ্গলবার বিকেলে পাপ্পুর সেই বাসা ঘেরাও করে। খবর পেয়ে রাত সাড়ে ৯টার দিকে পুলিশ গিয়ে পাপ্পু ও তার স্ত্রী বাঁধনকে উদ্ধার করে।
ভুক্তভোগীরা জানান, পাপ্পু নিজেকে এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর ভাতিজা পরিচয় দিতেন। তিনি এমপিকে দিয়ে চাকরি নিয়ে দেবেন এমন আশ্বাস দিয়ে ৩০ থেকে ৪০ জন যুবকের কাছ থেকে প্রায় তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু কাউকেই চাকরি দিতে পারেননি। এর মধ্যে অনেককেই ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে হয়রানি করেছেন। টাকা ফেরত চাইলে পাপ্পু উল্টো চাঁদাবাজির মামলা দিয়ে পুলিশে দেয়ার হুমকি-ধামকি দিতেন।
চাকরি প্রত্যাশী ইমন বলেন, ‘রেলে চাকরি দেয়ার কথা বলে আমিসহ প্রায় ১০ জন পাপ্পুকে মোটা অংকের টাকা দিয়েছি। আমাদের ভুয়া নিয়োগপত্রও দেয়া হয়েছিল। আমরা ১০ জন নিয়োগপত্র পাওয়ার পর চট্টগ্রাম রেলের দপ্তরে গেলে জানতে পারি আমাদের নিয়োগপত্র ভুয়া। পরে তারা ফিরে এসে পাপ্পুকে বিষয়টি জানালে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে যান। তারা টাকা ফেরত চাইলে গড়িমশি শুরু করেন পাপ্পু। এক পর্যায়ে টাকা ফেরত দিবে বলে সময় নেন। কিন্তু সময় গড়ালেও তিনি আর টাকা ফেরত দেননি। পরে থানায় মামলা করেছি।’
মামলা করার পর পাপ্পুর লোকজন বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকিও দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
স্বপ্নচাষ/একে
বাংলাদেশ সময়: ৫:১৪ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০১ মার্চ ২০২৩
swapnochash24.com | sopnochas24