সংগৃহীত
টেস্টে এ সময়ের সেরা অলরাউন্ডার কে? অ্যাগিয়াস বোলে সিরিজের প্রথম টেস্টের আগে আরও একবার উঠেছিল প্রশ্নটা। জেসন হোল্ডার আক্ষেপ করেই বলেছিলেন, তিনি টেস্টে র্যাংকিংয়ের এক নম্বর অলরাউন্ডার হলেও প্রাপ্য সম্মানটা পান না।
ভারতের কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান শচিন টেন্ডুলকারেরও মত তেমনটাই। শচিন টেস্টের আগের দিন ব্রায়ান লারার সঙ্গে কথোপকথনের এক পর্যায়ে বলেই ফেলেন, বিশ্বের সবচেয়ে আন্ডাররেটেড অলরাউন্ডার জেসন হোল্ডার। ব্যাটে-বলে নীরবে তিনি পারফর্ম করে যান, কিন্তু প্রচারের আলোয় আসেন কম।
আসলেই। সাউদম্পটন টেস্টের দ্বিতীয় দিনে হোল্ডার দেখালেন, তিনি নিজের দিনে কি করতে পারেন। আগুনে বোলিংয়ে ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের কাঁদিয়ে ছাড়লেন। করলেন ক্যারিয়ারসেরা বোলিং। সঙ্গে শেনন গ্যাব্রিয়েলও কম গেলেন না। দুই পেসারের বিধ্বংসী বোলিংয়েই মাত্র ২০৪ রানে গুটিয়ে গেল ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংস।
টেস্টের প্রথম দিন বৃষ্টির কারণে খেলা হয়েছিল মাত্র ১৭.৪ ওভার। তাই বোঝা যাচ্ছিল না, করোনা-বিরতির পর বিপদে পড়বেন কারা-বোলার নাকি ব্যাটসম্যান?
তবে দ্বিতীয় দিনে এসে মনে হচ্ছে, করোনার ধাক্কা সবচেয়ে বেশি গায়ে লাগবে ব্যাটসম্যানদেরই। ঘরের মাঠে খেলা, তারপরও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের সামনে রীতিমত ধুঁকেছেন ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা। কেউ হাফসেঞ্চুরিও করতে পারেননি। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৩ রান করেন অধিনায়ক বেন স্টোকস। তার উইকেটটিও নিয়েছেন প্রতিপক্ষ অধিনায়ক হোল্ডার।
শেনন গ্যাব্রিয়েলের বলে বোল্ড হয়ে আগের দিনই ফিরেছিলেন ডম সিবলি (০)। ১ উইকেটে ৩৫ রান নিয়ে খেলা শুরু করে ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় দিনের শুরুতে জো ডেনলিকেও (১৮) বোল্ড করেন সেই গ্যাব্রিয়েল। এক ওভার বিরতি দিয়ে ডানহাতি এই পেসার এলবিডব্লিউ করেন মোটামুটি আস্থার সঙ্গে খেলতে থাকা ররি বার্নসকেও (৩০)।
এরপর দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। জ্যাক ক্রলি আর অলি পোপকে অল্প রানেই সাজঘরে ফেরান তিনি। ক্রলি এলবিডব্লিউ হন ১০ রানে, পোপকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন ১২-তে। ৮৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে ইংল্যান্ড।
সেখান থেকে ষষ্ঠ উইকেটে প্রতিরোধের চেষ্টা স্টোকস আর জস বাটলারের। দায়িত্ব নিয়েই খেলছিলেন স্টোকস, দলও ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল। এ সময় ফের বাধা হয়ে দাঁড়ান হোল্ডার। তার ফুলার ডেলিভারিটা পুশ করতে গিয়ে এজ হয়ে উইকেটরক্ষকের ক্যাচ হন ৪৩ রানে থাকা স্টোকস।
এক ওভার বিরতি দিয়ে এসে স্টোকসের জুটির আরেক সঙ্গী বাটলারকেও (৩৫) উইকেটরক্ষকের ক্যাচ বানান হোল্ডার। তার পরের ওভারে আরও এক উইকেট। জোফরা আর্চারের (০) পায়ে বল লাগলে আম্পায়ার রিচার্ড ক্যাটলবোরো অবশ্য আঙুল তুলেননি। রিভিউ নিয়ে জিতে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
পাঁচ উইকেটের কোটা পূরণ করেও হোল্ডার থামেননি। মার্ক উডকে আউট করেন ৫ রানে। দশম উইকেটে আরও একবার প্রতিরোধের মুখে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জেমস অ্যান্ডারসনকে নিয়েই এগিয়ে যেতে থাকেন ডম বেস। শেষতক তাদের ৩০ রানের জুটিটি ভাঙেন গ্যাব্রিয়েল, জেমস অ্যান্ডারসনকে (১০) বোল্ড করে। ডম বেস ৩১ রানে অপরাজিতই থেকে যান।
গ্যাব্রিয়েল পান ৬২ রানে ৪ উইকেট। তাতে ক্যারিয়ারসেরা বোলিং নিশ্চিত হয়ে যায় হোল্ডারের। ক্যারিবীয় দলপতির এর আগে সেরা ছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে। ২০১৮ সালে কিংস্টোনে ৫৯ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন। এবার ৪২ রানে নিলেন ৬ উইকেট। ক্যারিয়ারে তার ৬ উইকেট শিকার এই দুইবারই।
স্বপ্নচাষ/এসএস
বাংলাদেশ সময়: ১০:০৩ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৯ জুলাই ২০২০
swapnochash24.com | sopnochas24