ফাইল ছবি
ঢাকার রাস্তায় মোটরসাইকেল চালকদের অধিকাংশই হেলমেট পরতেন না এক সময়। চালকের সহযাত্রী তো হেলমেট পরার কথা ভাবতেনই না। এ কারণে দুর্ঘটনায় অনেক চালক ও যাত্রীর প্রাণ গিয়েছিল। এরপর শুরু হয় ব্যতিক্রমী প্রচারাভিযান। তার শিরোনাম ছিল- ‘নো হেলমেট, নো ফুয়েল।’ পুলিশ কড়া নির্দেশনা দেয় সব পেট্রোল পাম্প ও সিএনজি স্টেশনের মালিকদের। হেলমেট ছাড়া কোনো চালক গাড়ি নিয়ে গেলে তাকে তেল দেওয়া যাবে না। সত্যি সত্যি ওই নির্দেশনা কাজেও আসে। রাতারাতি অনেকেই হেলমেট পরা শুরু করেন। বদলে যায় হেলমেট না পরার দৃশ্যপট।
এবার করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে ও সাধারণ মানুষকে এই ভাইরাসের ভয়াবহতা সম্পর্কে সজাগ করতে অভিনব প্রচারাভিযান শুরু করেছে শেরপুর জেলা পুলিশ। এলাকার বিভিন্ন দোকান ও ওষুধ বিক্রেতাদের তারা লিফলেট ও ব্যানার দিয়ে বলছে- ‘নো মাস্ক, নো মেডিসিন।’ ‘মাস্ক নাই যার, বাজার নাই তার।’ এমন উদ্যোগ এলাকায় এরই মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলতে শুরু করেছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শেরপুরের পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও বলছে বর্তমান পরিস্থিতিতে মাস্ক পরতে হবে। মাস্ক পরার দুটি তাৎপর্য রয়েছে। যে ব্যক্তি মাস্ক পরছেন না স্বাভাবিকভাবে বোঝা যায় সে করোনা সম্পর্কে খুব বেশি সচেতন নন। যার হাঁচি বা কাশি রয়েছে তাকে তো অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। এরই মধ্যে পুলিশের পক্ষ থেকে অনেক মাস্ক বিতরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি কয়েক হাজার পরিবারের মধ্যে দেওয়া হয়েছে খাদ্যসামগ্রী। মানুষকে তো তার নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে হবে। তবে বাসা থেকে বের হওয়ার পর সে যাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখে ও মাস্ক পরে, সেটা নিশ্চিত করছি আমরা।’
স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শনিবার শেরপুর শহরের বিভিন্ন মার্কেট এবং ওষুধের দোকানে গিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে বর্তমান পরিস্থিতিতে ক্রেতা-বিক্রেতার করণীয় সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়। এ ছাড়া শনিবার থেকে রাজধানীর অনেক এলাকায় নির্দিষ্ট স্থানে কাঁচাবাজারের বদলে বড় সড়কের পাশে দোকান বসানো হয়।
করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশের একটি বড় অংশ লকডাউন করা হলেও অনেকের মধ্যে এখনও সচেতনতা আসেনি। সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখেই অহেতুক এখানে সেখানে কেউ কেউ ঘোরাঘুরি করছে। বিশেষ করে রাজধানীসহ দেশের অধিকাংশ এলাকায় কাঁচাবাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকানে এখনও ঠেলাঠেলি করে কেনাকাটা করা হচ্ছে। এতে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। অনেকে আবার অহেতুক গাড়ি নিয়েও রাস্তায় বের হচ্ছেন।
পুলিশের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলছেন, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বহুমাত্রিক কাজ করে যাচ্ছে। ঝুঁকি নিয়ে মাঠে তারা সক্রিয় রয়েছে। লকডাউন নিশ্চিত করাসহ খাবার পৌঁছে দেওয়া এমনকি করোনা আক্রান্তদের দাফনেও ভূমিকা রাখছে তারা। এ ছাড়া জনগণকে সচেতন করতেও পুলিশ প্রতিনিয়ত নানা ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছে। জীবাণুনাশক ছিটানো এবং রোগীদের হাসপাতালেও পৌঁছে দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এমনকি নিয়মিত লকডাউন এলাকায় টহল দিচ্ছে তারা।
স্বপ্নচাষ/আরএস
বাংলাদেশ সময়: ১২:০১ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২০
swapnochash24.com | Anaet Karim