সংগৃহীত
পেটের তাগিদে আর চাকরি বাঁচাতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক দিয়ে আসতে শুরু করেছেন শত শত পোশাক শ্রমিক। দলবেঁধে কেউ হেঁটে কেউবা রিকশা, ভ্যান, মোটরসাইকেল ও মালবাহী যানবাহনে যে যেভাবে পারছেন কর্মস্থলে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
করোনাভাইরাসের কারণে গার্মেন্টস ও বিভিন্ন কারখানা দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর সরকারি নির্দেশে সীমিত পরিসরে খোলার খবরে আবারও পথে পা বাড়িয়েছেন খেটে খাওয়া শ্রমিকরা। সবাই ঢাকা, গাজীপুর ও আশুলিয়ার গার্মেন্টস কারখানায় যাচ্ছেন। তাদের বেশিরভাগই টাঙ্গাইলের বিভিন্ন উপজেলা, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, পাবনা, গাইবান্ধাসহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে আসছেন বলে জানা গেছে।
অনেকেই কারখানা খোলার খবরে রোববার রাত ও সোমবার ভোরে রওনা দিয়েছেন। গার্মেন্টসগুলো পুরো খুলেছে কি না জানেন না অনেকেই শুধু মালিক পক্ষের কাছ থেকে খবর পেয়ে চাকরি বাঁচাতে আসছেন বলে জানান।
সিরাজগঞ্জের কাজীপুর থেকে আসা সুরিয়া আক্তার বলেন, ঠিক সময়ে হাজির হতে না পারলে চাকরি থাকবে না। যেখানে গাড়ি ভাড়া ২শ টাকা সেখানে আসতে হাজার টাকার উপরে খরচ করে ফেলেছি।
সিরাজগঞ্জ সদরের বাসিন্দা গার্মেন্টকর্মী আলমগীর হোসেন বলেন, পথ যতই দূর হোক সোমবারের ভেতরেই পৌঁছাতে চান তিনি।
সিরাজগঞ্জ জেলার কাজীপুর উপজেলার গার্মেন্টকর্মী চান মিয়া বলেন, সোমবার ভোরে বাড়ি থেকে রওয়ানা দিয়েছি গাজীপুরে যাব। রাস্তায় তিনজন মিলে প্রায় দুই হাজার টাকা খরচ করেছি কিন্তু কখন পৌঁছাবো জানি না।
গাইবান্ধা থেকে গাজীপুরের সফিপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়া পোশাক কারখানার শ্রমিক ফুলমতি (৩২) বেগম বলেন, তারা ছয়জন রোববার রাতে বাড়ি থেকে বের হয়েছেন। মির্জাপুর পর্যন্ত আসতে প্রত্যেকের প্রায় ৮শ টাকা করে খরচ হয়েছে।
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর থেকে আসা আশুলিয়া এলাকার পোশাক কারখানার শ্রমিক রবিউল ইসলাম জানান, যাত্রীবাহী বাস চলাচল না করায় রিকশা ও বিভিন্ন ধরনের যানবাহনে আসতে বেশি খরচ হচ্ছে।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ভয় আছে কিনা জানতে চাইলে তারা বলেন, করোনার চাইতে ক্ষুদার যন্ত্রণা অনেক বেশি। ঘরে থাকলে না খেয়ে মরতে হবে।
তারা বলেন, ঘরে আটকা থাকলেও খরচ বন্ধ হয়নি। সরকার একবার খাদ্য সামগ্রী দিলে কয়দিন যায়?
সোমবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পোস্টকামুরী বাইপাস এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, শত শত গার্মেন্টকর্মী পায়ে হেঁটে ঢাকার দিকে যাচ্ছেন।
মির্জাপুরে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট মো. মোস্তাক আহমেদ বলেন, মহাসড়কে গণপরিবহন বন্ধ। শুধু জরুরি প্রয়োজনে ট্রাক চলছে। এরমধ্যেই সিএনজিচালিত বা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় মানুষ ঢাকার দিকে যাচ্ছে।
মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল মালেক বলেন, কারখানার শ্রমিকরা চাকরি রক্ষার উদ্দেশ্যে ঢাকা, গাজীপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছে। এক্ষেত্রে তাদের সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করে চলতে হবে। তাদের নির্বিঘ্ন যাতায়াত প্রশাসনের পক্ষ থেকে মনিটরিং করা হবে বলে তিনি জানান।
স্বপ্নচাষ/এসএস
বাংলাদেশ সময়: ১০:২৫ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২৭ এপ্রিল ২০২০
swapnochash24.com | Anaet Karim