খুনের অভিযোগে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার শিরিন বেগম। ছবি: জেলা পুলিশ
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার দক্ষিণ সাজুড়িয়া গ্রামের পুকুর পাহারাদার আবদুস সালাম (৪৭) নামে এক ব্যক্তি খুন হয়েছেন। প্রলোভন দেখিয়ে দুই বছর আগে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তুললেও বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় তাকে খুন করা হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন তার পরকীয়া প্রেমিকা।
সোমবার (১১ মে) দুপুরে নিজের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছেন ওই নারী।
জানা যায়, গত শনিবার দিবাগত রাতে সাজুড়িয়া গ্রামের পুকুরপাড়ের ছোট্ট ঘরে খুন হন পাহারাদার আবদুস সালাম। রোববার সকালে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে সেদিনই ওই গ্রামের শিরিন বেগম (৩৫) নামে এক নারীকে আটক করে পুলিশ। পুলিশের জেরার মুখে তিনি এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। পরে সোমবার আদালতে তোলা হয় তাকে।
জেলা পুলিশের মুখপাত্র ইফতেখায়ের আলম জানান, শিরিন বেগম সোমবার রাজশাহীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট উজ্জ্বল মাহমুদের আমলী আদালত-২ এ ফোজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। আদালতে তিনি জানিয়েছেন, পরকীয়া প্রেমের পর বিয়ে না করায় সালামকে খুন করেছেন তিনি।
শিরিন এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্যদেরও নাম জানিয়েছেন। তার দেয়া তথ্যমতে সোমবার সন্ধ্যায় সাজুড়িয়া গ্রামের কেফা, সেলিম ও রুস্তম নামের আরও তিন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সালাম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার স্ত্রীর দায়ের করা হত্যা মামলায় এ তিনজনকেও গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আজ মঙ্গলবার তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।
ইফতেখায়ের আলম জানান, গলায় রশির ফাঁসের দাগ ও রক্তাক্ত অবস্থায় সালামের লাশ উদ্ধারের পরই রাজশাহীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহিদুল্লাহ’র নির্দেশনা অনুযায়ী গুরুত্ব সহকারে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। এরপর হত্যায় সরাসরি অংশ নেয়া শিরিন বেগমকে আটক করা হয়। মূলত অবৈধ সম্পর্কের জের ধরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটেছে।
পুলিশ বলছে, বিয়ের প্রলোভন দিয়ে প্রায় দুই বছর আগে স্বামী পরিত্যক্তা শিরিন বেগমের সাথে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন সালাম। কিন্তু শিরিন বিয়ের কথা বললে সালাম কৌশলে এড়িয়ে যেতেন। গত শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুকুরপাড়ের একটা ঘরে মিলিত হন সালাম ও শিরিন। পরে শিরিন বিয়ের কথা বললে সালাম রেগে যান। এ সময় তাদের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়।
একপর্যায়ে শিরিন কাঠের বাটাম দিয়ে সালামের মাথায় জোরে আঘাত করেন। সালাম আহত অবস্থায় পড়ে থাকলে শিরিন তার পরিচিত কেফা, সেলিম ও রুস্তমকে ডাকেন। তারা আসার পর সালামের মাথায় আঘাত করেন এবং গলায় রশি পেঁচিয়ে ফাঁস দেন। মৃৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর তারা পালিয়ে যান।
জেলা পুলিশের মুখপাত্র ইফতেখায়ের আলম বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। হত্যার রহস্যও উদঘাটন হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা সম্ভব হবে।
স্বপ্নচাষ/আরএস
বাংলাদেশ সময়: ৫:১০ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১২ মে ২০২০
swapnochash24.com | sopnochas24