সংগৃহীত ছবি
লকডাউন পরিস্থিতিতে ঘরবন্দি মানুষ। বন্দিজীবনে কৃষকের জমানো সঞ্চয় আর খাদ্য শেষপ্রায়। এ অবস্থায় দিনাজপুরের চাষিদের চোখ এখন বোরো ধানের ক্ষেতে।
এবার বোরোর আবাদ ভাল হয়েছে। পুরো জেলার মাঠে মাঠে প্রতিটি গাছেই ধানের শীষ দুলছে। যা মোহিত করছে কৃষকদের। ধান ক্ষেতের মাঝে স্বপ্ন দেখছেন এখানকার বোরো চাষিরা।
আলাপকালে জেলার হাকিমপুর (হিলি) উপজেলার জালালপুর গ্রামের ধানচাষি আকরাম হোসেন বলেন, ‘দেশত তো করোনা আয়ছে। বায়ীত্তে (বাড়ি থেকে) বের হওয়া যাউছে না। এবার মুই তিন বিঘা জমিতে ইরি ধান লাগায়ছু। মাঠত ধান ভাল হইছে। ধান দেখে মোর মনটা জুড়ে যাউছে। বায়ীত (বাড়িতে) যা খাবার ছিলো তা প্রায় শেষ হচে। কেচু (কিছু) দিনের মধ্যে ধান কাটবা নাগবে (লাগবে)। ঘরত ধান উঠলে মোর আর কোন চিন্তা নাই।’
বিরামপুর উপজেলার কেটরা গ্রামের বোরোচাষি বাদল হোসেন বলেন, ‘এই বছর ইরি মৌসুমে আমি প্রায় ১৮ বিঘা জমিতে ইরি বোরো ধান চাষ করেছি। অন্য মৌসুমের চেয়ে এবার আমার ধানাজমিতে ধানের ভাল ফলনের সম্ভাবনা দেখছি। ধানের কোন রোগ বা পোকার আক্রমণ চোখে পড়ছে না। জমিতে যত ঘুরছি ততই ধান দেখে প্রাণ জুড়িয়ে যাচ্ছে। আশা করছি অন্য বছরের চেয়ে এবছরে ধানের ভাল ফলন পাবো।’
দিনাজপুর জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক তৌহিদুল ইকবাল জানান, চলতি মৌসুমে জেলার ১৩ টি উপজেলায় প্রায় ১ লাখ ৭১ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড, উফসী জাতের ধান চাষ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বোরো চাষিরা যাতে ভাল ফলন ঘরে তুলতে পারে সে জন্য জেলার প্রতিটি উপজেলার কৃষি কর্মকর্তারা নানা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। আশা করছি আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে ধান কাটা-মাড়াই শুরু হবে।’
হাকিমপুর (হিলি) উপজেলা কৃষি অফিসার শামীমা নাজনীন বলেন, ‘এবছরে চলতি মৌসুমে উপজেলায় প্রায় ৭৩২৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে। আমরা নিয়মিত মাঠে কৃষকদের পাশে থেকে পরামর্শ দিয়ে আসছি। প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হলে এবারে বোরো চাষিরা ভাল ফলন ঘরে তুলতে পারবেন।’
স্বপ্নচাষ/আরএস
বাংলাদেশ সময়: ১২:৫৮ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২০
swapnochash24.com | Anaet Karim