ছবি: সংগৃহীত
অবিভক্ত বাংলার প্রাদেশিক আইন পরিষদ সদস্য, মহান ভাষা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) প্রতিষ্ঠাতা মাদার বখশের ৫৬তম মৃত্যুবার্ষিকী শুক্রবার। ১৯৬৭ সালের এ দিনে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
মাদার বখশকে রাজশাহী হেতম খাঁ গোরস্থান দাফন করা হয়। তবে তার কবরের একটি অংশ ভেঙে ফেলেছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন।
স্বজনদের দাবি, গোরস্থানে উন্নয়নের নামে সংরক্ষিত কবরও ভেঙে ফেলা হয়েছে। মূলত গোরস্থানের নিরাপত্তা দেওয়াল নির্মাণের জন্য কাজ করতে গিয়ে গত তিন মাসে অনেক কবর ভেঙে ফেলা হয়েছে।
দেখা গেছে, সাড়ে তিন ফুট উঁচু প্রাচীর আট ফুট করতে গিয়ে ভাঙা হচ্ছে সারি সারি কবর। গোরস্থান লেন সংলগ্ন মাদার বখশের কবরের পায়ের অংশ ভাঙা পড়েছে। উঁচু প্রাচীরের কারণে কবরটি এখন দৃষ্টির অন্তরালে।
রাজশাহী সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সভাপতি আহম্মেদ শফিউদ্দিন বলেন, ‘মাদার বখ্শ রাজশাহী তথা দেশের গুরুত্বপূর্ণ ও সর্বজনশ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। কী কারণে গোরস্থানের প্রাচীর এত উঁচু করার দরকার হলো তা রহস্যজনক। অনুমান করা হচ্ছে বাজেটের টাকা বাড়াতেই এ সুউচ্চ প্রাচীর। এছাড়া স্থপতির পরামর্শ ছাড়াই এলোমেলোভাবে সংস্কার চলছে। বিষয়টির তদন্ত হওয়া দরকার।’
তিনি আরও বলেন, ‘এগুলো সংরক্ষিত কবর। এসব কবরে হাতে দেওয়া যাবে না। এটা জেনেও সিটি করপোরেশন উন্নয়নের নামে সেখানে সংস্কার করতে গিয়ে প্রাচীন ও প্রখ্যাত ব্যক্তিদের কবর ভেঙে ফেলছে। দক্ষিণ দিকে অনেক কবরের নাম ফলকও এখন নেই। ফলে সেগুলো কোন বিখ্যাত ব্যক্তি কবর জানা যাবে না। সিটি করপোরেশনের উচিত এগুলো দ্রুত সংরক্ষণ করা।’
মাদার বখশের নাতি ও রাজশাহী প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাইদুর রহমান বলেন, রাজশাহী উন্নয়নের নামে যা করছে এখানে আর কী বলবো। তাদের উচিত ছিল এটিকে কীভাবে সংরক্ষণ করা যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখা। তিনি রাজশাহীর গুণী মানুষ। অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তার হাতে তৈরি। এজন্যই রাজশাহীকে শিক্ষা নগরী বলা হয়। তবে উন্নয়নের নামে এগুলো করলে কিছু বলার নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘মাদার বখশ রাজশাহী পৌরসভার প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান। সেই পৌরসভা আজ সিটি করপোরেশনে উন্নতি হয়েছে। সেই সিটি করপোরেশনের এ ধরনের আচরণ খুবই দুঃখজনক। আমার চাই তার কবরটি তারা সংরক্ষণ করুক।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর ইসলাম বলেন, কাল একজনের মাধ্যমে এটি আমার শুনেছি। মাদার বখশের কবর আর ভাঙতে মানা করেছি। ওইটা আর ভাঙবে না। আমার লোকও পাঠিয়েছি। যেটুকু ভেঙেছে সেটুকুও গেঁথে দেবো।’
এদিকে তার মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে রাজশাহী প্রেস ক্লাব ও জননেতা আতাউর রহমান স্মৃতি পরিষদ। কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার সংগঠন দুটির উদ্যোগে নগরীর প্রায় ৫০ পরিবারকে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়।
এছাড়া শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) বিকেল ৩টায় নগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্ট রাজশাহী প্রেস ক্লাব চত্বরে এক স্মরণ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিশিষ্ট কলামিস্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রশান্ত কুমার সাহা। এতে বিশিষ্টজনরা বক্তব্য দেবেন।
স্বপ্নচাষ/এসএস
বাংলাদেশ সময়: ১১:৪৫ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারি ২০২৩
swapnochash24.com | sopnochas24