নিষ্ঠুর পৃথিবীতে তিলে তিলে মরতে যাওয়া মৌসুমি আক্তারের ঠিকানা হয়েছিল ঢাকার কোনো এক গার্মেন্টস কারখানায়। স্বামীর বাড়িতে ঠাঁই না হওয়া সেই ভাগ্যহত নব যৌবনা নারী সেখান থেকেই জীবনের স্বপ্ন বুনছিলেন। হয়তো সে স্বপ্নগুলো রঙ্গিন ছিল না। কিন্তু সেটাও সহ্য হলো না ভাগ্য বিধাতার। কেড়ে নিলেন জীবন-জীবিকার শেষ আশ্রয়টুকু, ঠেলে দিলেন মহা সমুদ্রে।
প্রচণ্ড জ্বর, সর্দি আর শ্বাসকষ্ট নিয়ে ট্রাকে চেপে ঢাকা থেকে বাড়ির দিকে যাত্রা শুরু করেন মৌসুমি আক্তার। তবে শেষ পর্যন্ত বাড়ি ফেরা হয়নি তার। যমদূত হাজির হয় ট্রাকেই। মৃত্যু মুখে পতিত হন ২২ বছর বয়সী মৌসুমি আক্তার। সাঙ্গ হয় তার এই পৃথিবীতে টিকে থাকার সংগ্রাম।
কিন্তু গল্প থামে না মৌসুমি আক্তারের। ট্রাকচালক রাস্তায় ফেলে দিয়ে চলে যান তাকে। পরে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে জায়গা হয় হাসপাতালের মর্গে। ভাগ্যহত বাবা লাশ চিহ্নিত করে নিয়ে যান তার গ্রামের বাড়ি লালমনিরহাটের পাটগ্রামে। করোনা রোগ সন্দেহে ইউপি চেয়ারম্যান লাশ নিয়ে এলাকায় ঢুকতে তো দিলেনই না, বরং হুমকি দিলেন অ্যাম্বুলেন্সসহ পুড়িয়ে দেয়ার। পরে অবশ্য তিনি সংবাদ সম্মেলন করে লাশ দাফনে বাধা দেওয়ার বিষয়টা অস্বীকার করেন এবং প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানান।
কিন্তু নিরুপায় মৌসুমির বাবা স্থানীয় লোকজনকে পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে অনুরোধ করেন বাহিরে কোনো এক জায়গায় মেয়ের লাশ দাফনের। কিন্তু লোকজন সেই লাশ নিয়ে গিয়ে ফেলে দেন স্থানীয় তিস্তা নদীতে। দুই দিন পরে আবারও লোকজনের নজরে আসেন সেই মৌসুমি আক্তার।
বাবাও জানতে পারলেন তার মেয়ের লাশ তখনও দাফন হয়নি। জায়গা হয়নি বিশাল এই পৃথিবীর কোনো এক জায়গায়।
খবর পেয়ে স্থানীয় পুলিশ লাশ উদ্ধার করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাফন সম্পন্ন করে।
লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
স্বপ্নচাষ/আরএস
বাংলাদেশ সময়: ৯:১৯ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ২৯ মে ২০২০
swapnochash24.com | sopnochas24
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ||||||
২ | ৩ | ৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ |
৯ | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ |
১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ |
২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ |
৩০ | ৩১ |