যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে বাস করছেন প্রায় ১ লাখ ৮৮ হাজার বাংলাদেশি। তবে তাদের মধ্যে খুব অল্প সংখ্যকই রয়েছেন যারা দেশটিতে সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। এরমধ্যে সবথেকে পরিচিতদের একজন হ্যানসেন ক্লার্ক। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কংগ্রেসম্যান যার জন্ম বাংলাদেশে। ২০১১ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত মিশিগানে ডেমোক্রেট দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন। তবে এবার দেশটিতে ইতিহাস গড়তে চলেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত নারীরা। আগামি নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের ৫ বাংলাদেশি মুসলিম নারী লড়তে চলেছেন।
এরমধ্যে রয়েছেন নাবিলাহ ইসলাম, তিনি জর্জিয়া থেকে মার্কিন কংগ্রেসের জন্য লড়বেন। আরেক বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত শারমিন শাহজাহান ইলিনয়ের হ্যানওভার পার্কের পুননির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবেন।
রয়েছেন ম্যারি জোবাইদা যিনি নিউ ইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলিতে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে যাচ্ছেন। মৌমিতা আহমেদ নামের আরেক বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত নারী কুইনস থেকে ডিস্ট্রিক্ট লিডার পদে লড়বেন। নিউ ইয়র্ক সিটি কাউন্সিলের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে যাচ্ছেন আরেক বাংলাদেশি নারী শাহানা হানিফ।
নাবিলা ইসলাম বলেন, আমার মতো দেখতে মানুষেরা রাজনীতিতে কম আসছে কারণ এখানে নির্বাচন করা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। তিনি জর্জিয়ার সপ্তম ডিস্ট্রিক্ট থেকে নির্বাচন করবেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে এটিতে সবথেকে বেশি প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ন ফলাফল পাওয়া গিয়েছিলো। তিনি বলেন, তার আজকের এই অবস্থানের জন্য সবথেকে বেশি অবদান তার মায়ের। তিনি আমাকে ও আমার ভাইকে বড় করতে কঠিন পরিশ্রম করেছেন। তিনি আজীবন কম বেতনে চাকরি করে গেছেন। সেখান থেকেই আমার মধ্যে রাজনীতিতে আসার চিন্তা জাগ্রত হয়েছে। আমার মায়ের মতো মানুষদের জন্য কিছু করার ইচ্ছাই আমাকে এখানে নিয়ে এসেছে। নাবিলা ইসলাম হতে পারেন কংগ্রেসে প্রথম বাংলাদেশি নারী।
শারমিন শাহজাহানের মতে, বাংলাদেশিদের স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গে স¤পৃক্ততা কম হওয়ার কারণে তারা সচরাচর এ পথে আসতে চায় না। অনেকেই চিন্তা করেন, যদি আমরা রাজনীতিতে ঢুকে যাই তাহলে তা আমাদের ভবিষ্যতকে বদলে দেবে, সন্তানদের জীবনে তার প্রভাব পড়বে। তিনি বলেন, যখন আপনি আপনার সম্প্রদায়ের মধ্যে থেকে প্রথম কেউ হবেন তখন আপনাকে নিজে থেকেই সব বুঝে নিতে হবে।
শাহানা হানিফ একজন কমিউনিটি অর্গানাইজার। নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশিরা সবথেকে দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়া জাতিগোষ্ঠিগুলোর মধ্যে একটি। মার্কিন রাজনীতিতে উঠে আসা আরেক বাংলাদেশি ম্যারি জোবাইদা বলেন, বাংলাদেশে মানুষের ৫টি মৌলিক চাহিদার কথা বলা হয় তা হলো খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, খাদ্য ও চিকিৎসা। যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রেও বিষয়টি একই, কোনো পার্থক্য নেই। বাংলাদেশিদের জন্য এগুলোর জন্য লড়াই খুবই সাধারণ একটি বিষয়। যুক্তরাষ্ট্রেও একই অবস্থা চলছে। তিনি নিউ ইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলির প্রথম মুসলিম নারী ও প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে জয়ী হতে পারেন।
মৌমিতা আহমেদ বলেন, নির্বাচন বোর্ড প্রথমে আমার নাম পরিবর্তন মেনে নিতে পারেনি। ফলে তারা তার আবেদন প্রত্যাখ্যান করে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সবাই একটি ডাক নাম নিয়ে বড় হয় যা তার আসল নাম থেকে আলাদা। তাই তিনি তার নাম আতকিয়া থেকে মৌমিতা করতে চাইলে তা প্রত্যাখান করা হয়। ম্যারি জোবাইদার ক্ষেত্রেও একই সমস্যা দেখা যায়। তবে পরবর্তীতে তারা আদালতে গেলে সেখানে তাদের পক্ষেই রায় দেয়া হয়।
স্বপ্নচাষ/আরএস
বাংলাদেশ সময়: ৩:২০ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০২ জুন ২০২০
swapnochash24.com | sopnochas24