• শনিবার ২৫শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ ১১ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

    শিরোনাম

    স্বপ্নচাষ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন  

    রাজধানীতে রক্তের সংকট, দিশেহারা রোগীর স্বজনরা

    স্বপ্নচাষ ডেস্ক

    ১৯ এপ্রিল ২০২০ ১০:৪২ অপরাহ্ণ

    রাজধানীতে রক্তের সংকট, দিশেহারা রোগীর স্বজনরা

    সংগৃহীত

    রাজধানীতে বেড়েছে রক্তের সংকট। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন রোগীর স্বজনরা। করোনাভাইরাসের কারণে মানুষ ঘর থেকে বের হতে না পারায় এই সংকট দেখা দিয়েছে।

    মো. আকরাম ফকির (৫০)। পেশায় একজন কসমেটিকস ফেরিওয়ালা। রোববার (১৯ এপ্রিল) সকাল পৌনে ১০টার দিকে তিনি গাজীপুরের বুরুলিয়া থেকে বাজার করার জন্য সাইকেল নিয়ে বের হন। গাজীপুর সদরে মোশারফ টাওয়ারের সামনে দিয়ে রাস্তা পার হতে গেলে দ্রুতগামী চালবোঝাই ট্রাক পেছন থেকে তাকে ধাক্কা দেয়। এরপর স্থানীয়রা তাকে গাজীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান।

    খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান স্ত্রী সাহিদা বেগম ও মেয়ে আয়েশা আক্তার নীলা। সেখানে গিয়ে তারা জানতে পারেন বাবার ডান পায়ে হাঁটুর নিচ থেকে ভেঙে কয়েক টুকরা হয়ে গেছে। প্রচুর রক্ত বের হয়েছে। সদর হাসপাতালের চিকিৎসকরা তার রক্ত বন্ধ করতে পারেননি। পরে সদর হাসপাতাল থেকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত পঙ্গু হাসপাতালে (জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান) তাকে রেফার্ড করা হয়।

    অ্যাম্বুলেন্সে তাকে আনার সময়ও সিট রক্তে একাকার হয়ে যায়। পঙ্গু হাসপাতালে আনার পরও তারা রোগীর ট্রিটমেন্ট করেননি।

    মেয়ে আয়েশা আক্তার নীলা বলছিলেন, তাদের (পঙ্গু পাসপাতাল কর্তৃপক্ষ) বারবার বলেছি, আমার বাবার শরীরে রক্ত নেই। রক্ত দেন। না হলে মারা যাবে। কিন্তু তারা আমাদের কাছেও যেতে দেয় না, আমাদের কোনো কথাও শোনে না। গালাগালি করে। দেখলাম এখানে রাখলে রোগীকে বাঁচানো যাবে না।

    ‌সেখান থেকে জরুরি চিকিৎসার জন্য আকরাম ফকিরকে মোহাম্মদপুরে কলেজগেটের পাশে প্রাইম অর্থোপেডিক ও জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন স্ত্রী ও মেয়ে।

    এমন সময় প্রাইম হাসপাতালের এক স্টাফ নাজিবুল ইসলাম (লালু) আসেন। তিনি ওই মেয়ের কান্না দেখে জানতে চান, কী হয়েছে? মেয়ে জানান, বাবার বি-পজেটিভ রক্ত লাগবে। কিন্তু পাচ্ছি না। পরে তিনি তার বাবাকে এক ব্যাগ রক্ত দেন।

    এরপর মেয়ে নীলার রক্তের গ্রুপ টেস্ট করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রক্তের গ্রুপ মিলে যায়, ম্যাচও করে। দেয়া হয় এক ব্যাগ। এখন আরও এক ব্যাগ রক্ত লাগবে।

    নীরব (১৯) ট্রাকের হেলপার। গত ১৪ এপ্রিল টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে নীরবের বাম পা মারাত্মকভাবে ইনজুরি হয়। শরীর থেকে প্রচুর রক্ত বের হয়। সেখান থেকে তাকে ঢাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু তার বাম পা কেটে ফেলতে হয়। তার শরীরে এখন পর্যন্ত এ(+) পজেটিভ ১৩ ব্যাগ রক্ত দেয়া হয়েছে।

    নীরব বলছিলেন, করোনাভাইরাসের কারণে রক্তের দাম অনেক। কিন্তু ভালো রক্ত পাওয়া যায় না। শরীরে আরও রক্তের দরকার। কত কষ্ট করে রক্ত ম্যানেজ হয়েছে। এখন কোথাও রক্ত পাচ্ছি না। রাজধানী ব্লাড ব্যাংক, কোয়ান্টাম সেন্টার, রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, বাংলাদেশ ব্লাড ব্যাংক ও মালিহা ব্লাড ব্যাংকে যোগাযোগ করা হলেও রক্তের ব্যবস্থা করতে পারছি না। ছোটাছুটি করছি, কিন্তু রক্ত পাওয়া যাচ্ছে না।

    রাজধানী ও আলিফ ব্লাড ব্যাংকের মালিক খন্দকার আব্দুল হালিম স্বপ্নচাষকে বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে ঘর থেকে মানুষ বের হতে পারছে না। ব্লাড ম্যানেজ করা এখন খুব কঠিন হয়ে পড়েছে। আমাদের কাছে মানুষ অসহায় হয়ে আসে। কিন্তু আমরা ব্লাড দিতে পারছি না। যখন মুমূর্ষ রোগীর জন্য ব্লাড দিতে পারি না তখন নিজেদের খুব অসহায় মনে হয়।

    Facebook Comments Box
    স্বপ্নচাষ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন  

    বাংলাদেশ সময়: ১০:৪২ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২০

    swapnochash24.com |

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
     
    ১০
    ১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
    ১৮১৯২০২১২২২৩২৪
    ২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
    advertisement

    সম্পাদক : এনায়েত করিম

    প্রধান কার্যালয় : ৫৩০ (২য় তলা), দড়িখরবোনা, উপশহর মোড়, রাজশাহী-৬২০২
    ফোন : ০১৫৫৮১৪৫৫২৪ email : sopnochas24@gmail.com

    ©- 2023 স্বপ্নচাষ.কম কর্তৃক সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত।