শেখ কামাল দ্বিতীয় বাংলাদেশ যুব গেমস খেলে ঢাকা থেকে ফেরার পথে রাজশাহীতে রেলওয়ে স্টেশনে জাতীয় জরুরিসেবা ‘৯৯৯’-এ কর্মরত এক পুলিশ কনস্টেবল ও তার স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া বাকি খেলোয়াড়েরাও জামিন পেয়েছে। মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে রাজশাহী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের-৩ বিচারক লিটন হোসেন তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনপ্রাপ্তরা হলেন- মহানগরীর পাচানি মাঠ এলাকার আলী আজম (১৯), হাজরাপুকুর ডাবতলা এলাকার আকাশ আলী মোহন (২০), ছোটবনগ্রাম উত্তরপাড়ার দিপালী (১৯), মোহনপুর উপজেলার কেশরহাট এলাকার খাদিজা খাতুন (১৮), রাজশাহী মহানগরীর বখতিয়ারবাদ মালদা কলোনি এলাকার পাপিয়া সারোয়ার পূর্ণিমা (১৯), বড় বনগ্রাম রায়পাড়া এলাকার সাবরিনা আক্তার (১৯) এবং তাঁদের কোচ আহসান কবীর (৪৫)। এছাড়া পলাতক হাজরাপুকুর ডাবতলা এলাকার মো. রমজান (১৯) গতকাল মঙ্গলবার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে শুনানি শেষে তাঁকেও আদালত জামিন দিয়েছেন।
এর আগে সোমবার দুপুরে অপ্রাপ্তবয়স্ক নারী খেলোয়াড়সহ ৫ জনের জামিন মঞ্জুর করা হয়। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-২ এর আদালতে শুনানি শেষে বিচারক মুহা. হাসানুজ্জামান তাদের জামিন মুঞ্জুর করেন। সেই সঙ্গে তাঁদের প্রবেশন কর্মকর্তার নজরদারিতেও থাকার আদেশ দেন আদালত।
এদিকে, মঙ্গলবার আদালতে জামিন শুনানির আগে খেলোয়াড়ের স্বজনেরা গ্রেপ্তার খেলোয়াড়দের মুক্তির দাবিতে রাজশাহী কোর্ট স্টেশন এলাকায় মানববন্ধন করেন। সেখানে তাঁরা রাজশাহী রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোপাল কুমারের অপসারণ দাবি করেন। এই কর্মসূচিতে রাজশাহীর বিভিন্ন দলের খেলোয়াড় ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্যরা অংশ নেন।
জানা যায়, শেখ কামাল দ্বিতীয় বাংলাদেশ যুব গেমস খেলে গত শনিবার ঢাকা থেকে রাজশাহী ফেরার পথে ট্রেনে গোলাম কিবরিয়া (৩০) নামে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কর্মরত এক পুলিশ সদস্যের সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে ওই খেলোয়াড়দের। এ ঘটনায় ওই পুলিশ কনস্টেবলের স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা জয়া বাদী হয়ে রাজশাহী রেলওয়ে থানায় ১২ জন খেলোয়াড় ও তাদের কোচের নামে মামলা দায়ের করেছেন। এতে এক খেলোয়াড়কে ছাড়া সবাইকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে রোববার রাত ৮টার দিকে রাজশাহীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নেওয়া হলে ছয় খেলোয়াড় ও কোচকে ভারপ্রাপ্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এছাড়া অপ্রাপ্তবয়স্ক পাঁচ খেলোয়াড়কে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-২ তোলা হলে রাতে তাঁরা সোমবার সকাল ১০টা পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পান।
জানা যায়, গত শনিবার এই খেলোয়াড়দের পুরস্কারের টাকা, মেডেলসহ ব্যাগ ট্রেনের মধ্যে হারিয়ে যায়। ব্যাগ খোঁজাখুঁজির সময় সাদা পোশাকে থাকা ওই পুলিশের গায়ে একটু ধাক্কা লাগে। তখন আলী আজম নামের এক খেলোয়াড় ‘সরি’ বলেন। এরপরেও পুলিশ সদস্য তাঁর কলার ধরে চড় দেন। তখন অন্য খেলোয়াড়েরা এগিয়ে গেলে হাতাহাতি হয়।
এসময় ধাক্কা লেগে ওই পুলিশের স্ত্রীর নাক দিয়ে রক্ত বের হয়। স্টেশনে নামার পরে ওই পুলিশ সদস্য রেলওয়ে থানার পুলিশ ডেকে সবাইকে থানায় নিয়ে যান। সেখানে তাঁর স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা তাঁর গলার চেইন ছিনতাই করার অভিযোগে মামলা দিলে পুলিশ সবাইকে গ্রেপ্তার করে। এই খেলোয়াড়েরা জুডো, কুস্তি, কারাতেসহ বিভিন্ন খেলায় অংশ নিয়ে থাকেন। আগামী ১৮ মার্চ তাদের ভারতে খেলতে যাওয়ার কথা রয়েছে বলে জানান তাঁদের অভিভাবকেরা।
স্বপ্নচাষ/একে
বাংলাদেশ সময়: ৫:৩৫ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৭ মার্চ ২০২৩
swapnochash24.com | sopnochas24