মনসুর রহমান
বার্ধক্যজনিত কারণে শরীরে বাসা বেধেছে নানা রোগ। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসও আক্রান্ত হন তিনি। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে সব সময় ভয় আর আশঙ্কায় যুদ্ধ করেছেন করোনাভাইরাসের সঙ্গে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়ম মেনে শেষ পর্যন্ত ৮৪ বছর বয়সে করোনা জয় করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন রাজশাহীর মোহনপুরের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মনসুর রহমান।
তিনি বলেন, করোনা শনাক্ত হওয়ার পর তাকে একা থাকতে হয়েছে। কিন্তু পরিবার ও চিকিৎসকদের সব সময় তার কাছে পেয়েছেন। চিকিৎসকদের গাইড লাইন মানার কারণে দিন দিন তার শারীরিক উন্নতি হওয়ার কারণে তার আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। মনে গভীরে জমে থাকা কালো মেঘটি আস্তে আস্তে কেটে গেছে। সুস্থ হয়ে উঠেছেন তিনি।
মনসুর রহমানের বাড়ি রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার জাহানাবাদ ইউনিয়নের নওনগর গ্রামে। তার এক ছেলে ও চার মেয়ে। কলেজ শিক্ষক ছেলের সঙ্গে তিনি গ্রামে থাকেন। গত ২৬ এপ্রিল নমুনা পরীক্ষায় তার শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। তারপর বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিয়ে তিনি সুস্থ হয়েছেন।
পরপর ৪ বার পরীক্ষা শেষে রবিবার তাকে করোনামুক্ত ঘোষণা করেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. এনামুল হক।
মনসুর রহমান বলেন, এই দুঃসময়ে নিকট আত্মীয়ের মত পাশে ছিলেন মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। এই বয়সে আমি যদি প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত হতে পারি; তাহলে আমার বিশ্বাস চিকিৎসকদের নির্দেশনা মেনে চললে এবং আত্মবিশ্বাস না হারালে সবাই করোনা থেকে মুক্ত হতে পারবেন।
মনসুরের ছেলে কলেজ শিক্ষক আল-আমিন জালাল বলেন, ‘আমার বাবা এই বয়সে করোনা জয় করলেন। এ জন্য মহান আল্লাহর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিকে ভয় না করে কাছে রেখে সাহস দিয়ে আত্মবিশ্বাস ও শরীরে ইমিউনিটি বাড়লে এবং সেবা দিলে খুব সহজেই সুস্থ্ হয়ে যান।’
মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আরিফুল কবীর বলেন, ৮৪ বছর বয়সের বৃদ্ধের করোনা জয় নজির সৃষ্টি করেছে। দেশে এতো বয়সের কোন করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়েছে কি না তা জানা নেয়। তবে তিনিই দেশের সবচেয়ে বয়স্ক করোনা আক্রান্ত সুস্থ হওয়া রোগী। তার সুস্থ্যতা করোনায় আক্রান্ত রোগীদের আরও আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে।’
স্বপ্নচাষ/আরএস
বাংলাদেশ সময়: ৩:৩৬ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০১ জুন ২০২০
swapnochash24.com | Anaet Karim