প্রতীকী ছবি
করোনাভাইরাসের কারণে বন্ধ রয়েছে বেশির ভাগ স্থাপনা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হতে শুরু করে নির্মাণাধীন ভবনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বন্ধের কারণে বৃষ্টির পানি জমে সেখানে জন্ম নিচ্ছে এডিস মশার লার্ভা। প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় মশার কীটনাশকও ছিটানো যাচ্ছে না সেখানে। ফলে মশার উপদ্রব আগে থেকেই বেড়েছে রাজধানীতে। অন্যদিকে করোনা ভাইরাসের কারণে এখন বেশির ভাগ মানুষ ডেঙ্গু পরীক্ষা করছেন না। এতে ডেঙ্গু রোগী গত এপ্রিল মাসে কমে গেছে। করোনার পাশাপাশি জ্বরের রোগীদের ডেঙ্গু পরীক্ষার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকে গত শুক্রবার পর্যন্ত ২৯৬ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ২৯৪ জন সুস্থ হয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী ডেঙ্গু রোগীদের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত বছরের তুলনায় এ বছর ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। তবে শুধু এপ্রিল মাসে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কম। আর এটি ডেঙ্গু জ্বর পরীক্ষা না করার কারণে হয়েছে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। হিসাব অনুযায়ী, ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে ডেঙ্গু রোগী ছিল ৩৮ জন । যেটি ২০২০ সালে হয় ১৯৯ জন। ২০১৯ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে ডেঙ্গু রোগী ছিল ১৮ জন। যেটি ২০২০ সালে হয় ৪৫ জন। ২০১৯ সালের মার্চ মাসে ছিল ১৭ জন, যেটি ২০২০ সালে হয় ২৭ জন। শুধু এপ্রিল মাস ২০১৯ সালে ছিল ৫৮ জন। কিন্তু ২০২০ সালে সেটি মাত্র ১৯ জনে নেমে আসে।
এ বিষয়ে কীটতত্ত্ববীদ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কবীরুল বাশার বলেন, যারা জ্বরে আক্রান্ত তারা হাসপাতালে যাচ্ছেন না ভয়ে। আবার যারা যাচ্ছেন হাসাপাতালগুলোও করোনার ভয়ে তাদের ডেঙ্গুর পরীক্ষা করতে চাচ্ছে না। জ্বরের রোগী পেলেই শুধু করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে করোনার পাশাপাশি রোগীর ডেঙ্গু ও চিগুনগুনিয়ার পরীক্ষা করাতে হবে।
তিনি বলেন, এই লকডাউনের সময় বন্ধ প্রতিষ্ঠান ও বাস টার্মিনালে প্রচুর এডিস মশার লার্ভা হয়ে আছে আমরা জরিপ করে দেখেছি। বিশেষ করে বাস টার্মিনালের পরিত্যক্ত টায়ারের মধ্যে পানি জমে সেখানে লার্ভা তৈরি হয়েছে। এছাড়া নির্মাণাধীন ভবনেও এর সংখ্যা বেশি। তাই সিটি করপোরেশন যদি এটি নিয়ন্ত্রণ না করে তাহলে জুন-জুলাইয়ে প্রচুর পরিমাণে এডিশ মশা বেড়ে যাবে। এখনি এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে।
এদিকে রাজধানীতে বিভিন্ন এলাকায় দিনের বেলায়ও মশার উপদ্রব বেড়েছে। আবার সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে মশার পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাজধানীর মুগদা এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মাজিদ বলেন, ‘সিটি করপোরেশনে ট্যাক্স দিয়েও আমরা কাঙ্ক্ষিত সেবা পাই না। তাদের (সিটি করপোরেশন) সবচেয়ে বড়ো কাজ হলো মশক নিধন। এ কাজেই তাদের সবচেয়ে বেশি গাফিলতি করতে দেখা যায়।’
একই কথা বলেন একটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক আফতাবনগর এলাকার বাসিন্দা সামিয়া আক্তার। তিনি বলেন, ‘শহরের যেকোনো এলাকার তুলনায় আফতাব নগরে মশার উত্পাত বেশি। মাঝেমধ্যে মশার ওষুধ ছিটানো হলেও তা কোনো কাজে আসে না। খাল পরিষ্কার না করলে আমরা মশার হাত থেকে রক্ষা পাব না।’
এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আমি নিজে তদারকি করছি সকালে মশক নিধন কর্মীরা লার্ভি সাইডিং করছেন কী না। এছাড়া কিছুদিন আগে আমরা ঢাকার খালগুলো এলজিআরডি মন্ত্রী, সচিব, রাজউকের চেয়ারম্যান, ওয়াসার এমডিসহ দেখতে গিয়েছি। সব সংস্থা নিয়ে মশক নিধন বিষয়ে আমাদের মিটিংও হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি। পাশাপাশি সবাই যেন তাদের বাসা বাড়ি পরিষ্কার রাখে। তাহলে সবাই মিলে আমরা এটি মোকাবিলা করতে পারব। সূত্র : দৈনিক ইত্তেফাক।
স্বপ্নচাষ/আরএস
বাংলাদেশ সময়: ৪:৫৭ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ০৬ মে ২০২০
swapnochash24.com | sopnochas24
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ||||||
২ | ৩ | ৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ |
৯ | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ |
১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ |
২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ |
৩০ | ৩১ |