সংগৃহীত ছবি
প্রাণঘাতী করোনা পরিস্থিতির কারণে গোটা দেশে লকডাউন চলছে। বিভাগীয় শহর রাজশাহীও এর বাইরে নয়। কিন্তু ক্রমেই করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকা এই শহরে লোক সমাগম দেখে বোঝার উপায় নেয় যে লকডাউন চলছে!
ক্রমেই লকডাউনের নির্দেশনা উপেক্ষা করে মানুষ নেমে আসছেন ঘরের বাইরে। নানা অজুহাতে বেরিয়ে আসা মানুষকে ঘরমুখি করা যাচ্ছে না।
শহরের রাজপথ থেকে শুরু করে হাট-বাজার ও পাড়া-মহল্লার গলিপথ সর্বত্রই গিজগিজ করছে মানুষ। সচেতনতার অভাবে মানুষের মধ্যে রক্ষা করা যাচ্ছে না শারীরিক ও সমাজিক দূরত্ব।
রবিবার সড়কে গাড়ি চলাচলের আধিক্য লক্ষ্য করা গেছে সর্বত্র। পাড়া মহল্লার ভেতরের দোকানপাটও খুলে বসছেন অনেকে। এছাড়া বিভিন্ন এলাকায় গত দুইদিন থেকেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে মানুষের ব্যাপক উপস্থিতি।
রবিবার সকালে রাজশাহী মহানগরের সাহেব বাজার জিরোপয়েন্ট আলুপট্টি কুমারপাড়া, লক্ষ্মীপুর, সিঅ্যান্ডবির মোড়, গোরহাঙ্গার থাকা শহীদ এএইচএম কামরুজ্জামান চত্বরে গিয়ে দেখা যায় মানুষের ব্যাপক উপস্থিতি।
অনেকটা স্বাভাবিকভাবেই সকাল থেকে চলছে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও অটোরিকশা। দেখে বোঝার উপায় নেই লকডাউন চলছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে উপস্থিত থাকলেও ঢিলেঢালাভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। কোনো রকম বাধা না থাকায় সড়কে যানবাহন চলাচলের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।
তবে করোনাভাইরাস যেহেতু ব্যক্তির সংস্পর্শে ছড়িয়ে পড়ে তাই সবাইকে ঘরে থাকার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হচ্ছে বারবার। কারণ চলমান এ ছুটির মূল উদ্দেশ্যই ছিল কোয়ারেন্টিন বা সঙ্গনিরোধ।
কিন্তু ধীরে ধীরে রাজশাহীর পরিস্থিতি আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। কোনো কোনো এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এসে তাড়া দিলে লোকজন বাড়ি বা গলিপথে ঢুকে যাচ্ছে। আবার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা চলে যাওয়ার পরপরই সবাই বাইরে সড়কে নেমে আসছেন। সচেতনতার অভাবে মানুষ যেন ঘরে থাকতেই চাচ্ছেন না। আবার যারা ঘরে থাকছেন তারাও মাঝে মধ্যেই বাইরে গিয়ে দলবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন কাজ-কর্ম খেলা বা আড্ডায় মেতে উঠছেন।
তবে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে রাজশাহীর কাঁচাবাজারে কাজ করেছে সেনাবাহিনী। তারা বাজারে আসা মানুষদের শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে কাজ সেরে দ্রুত বাড়ি চলে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন। সেইসঙ্গে সবার মুখে মাস্ক পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করছেন।
এদিকে, করোনার সংক্রমণ রোধে জেলা প্রসাশন রাজশাহীর কাঁচাবাজারকে একমুখী করা হয়েছে। আগে এ বাজারে সড়কের দুই পাশেই ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য নিয়ে বিক্রি করতেন।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক জানান, শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করার জন্য তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। সেনা সদস্যরা এজন্য মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন। তাদের পাশাপাশি পুলিশসহ অন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মাঠে রয়েছেন। করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে সবধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
স্বপ্নচাষ/আরএস
বাংলাদেশ সময়: ১১:৩২ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৩ মে ২০২০
swapnochash24.com | sopnochas24