বাংলাদেশে দীর্ঘদিন গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকায় জনগণ দেশের অতীত ইতিহাস ভুলে গেছেন বলে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী। পঁচাত্তরের পরবর্তীতে দেশে হত্যা, প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন টকশো করেন। যে যার মত কথা বলেন।’ আওয়ামী লীগ সরকারে আসার আগে কেউ এত কথা বলার সুযোগ পেয়েছে কি না সেই প্রশ্ন করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘কেউ সুযোগ পায়নি। একটা টেলিভিশন ও রেডিও ছিল। কোথায় টক শো হবে? কোথায় মিষ্টি কথা? সেই তেঁতুলের টকই হোক কিংবা রসগোল্লার মিষ্টি। সেই সুযোগতো সবাই পায়নি। কথা বলার অধিকার ছিল না।’
‘এখন শুনি। সব কথা বলার পরে বলে কথা বলার অধিকার নাই। এটাও শুনতে হয়। আজকে রাস্তায় আন্দোলন . এখন জনগণ সাড়া না দিলে সেটাতো আমাদের দায়িত্ব না। কিন্তু আওয়ামী লীগ যে বিএনপির হাতে নির্যাতিত, সেই কথাটা কি ভুলে গেছেন? আমাদের ওপরতো সবাই চড়াও হয়েছে। সেই জিয়াউর রহমান শুরু করল, তারপর একের পর এক। লাশ টানতে টানতে ও আহতদের চিকিৎসা করাতে করাতে নাভিশ্বাস উঠেছিল আমাদের। আজকে কি সেই পরিবেশ আছে? তাতো নাই।’
দলের কেউ অন্যায় করলে ছাড়া হয় না বলে জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি। তিনি বলেন, ‘দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে, কিছু বলব না, তা না। যে অন্যায় করবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব এবং নিচ্ছি। সেটা আমি কখনো সহ্য করব না। কারণ আমি চাই এই দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকুক আর শান্তি বজায় থাকুক।’
যারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নিয়ে কথা বলছে তাদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা কি ১ / ১১ ’র কথা ভুলে গেছে? ২০০৭ সালের কথা ভুলে গেছে? তখন কী অবস্থাটা সৃষ্টি হয়েছে। রাজনৈতিক কর্মী, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী সবার নাভিশ্বাস উঠেছিল। সেখান থেকে সবাই অন্তত মুক্তি পেয়েছেন।’
২০০৯ থেকে এখন পর্যন্ত সবার স্বাধীনভাবে কথা বলার, চলার অধিকার, সমালোচনা এবং প্রশংসা করার অধিকার সবাই পাচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘কাউকে মুখ বন্ধ করে রাখছি না। আমরাতো বাধা দিচ্ছি না। আমরাতো মত প্রকাশে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছি। সেটা স্বীকার করতে হবে।’
৫ সেপ্টেম্বর নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে বাংলাদেশ বিমানের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে নয়াদিল্লি যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। এসব বৈঠকে ব্যবসা-বাণিজ্য, জ্বালানি, অভিন্ন নদ-নদীর পানিবণ্টন, সীমান্তে হত্যা ও রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সহযোগিতার বিষয়গুলো বেশি গুরুত্ব পায়।
সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রী কিষান রেড্ডি, ভারতের আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি।
সফরের দ্বিতীয় দিন ৬ সেপ্টেম্বর সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ সফরে শেখ হাসিনা রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ ছাড়া দিল্লিতে হজরত নিজামুদ্দিন আউলিয়া দরগাহ পরিদর্শন করেন তিনি।
বাংলাদেশ-ভারত ব্যবসায়িক ফোরাম আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও যুদ্ধাহত ভারতীয় সৈনিকদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ‘মুজিব স্কলারশিপ’ দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সফরসঙ্গী হিসেবে ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক।
স্বপ্নচাষ/এমএস
বাংলাদেশ সময়: ৭:২৫ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২
swapnochash24.com | sopnochas24
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ||||||
২ | ৩ | ৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ |
৯ | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ |
১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ |
২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ |
৩০ | ৩১ |