জাতীয় সংসদ নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে রাজশাহীতে আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ততই প্রকাশ্য রূপ নিচ্ছে। দলীয় পদ কিংবা দলীয় মনোনয়ন পাওয়া-না পাওয়া নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের কিছু সাবেক ও বর্তমান নেতাদের মধ্যে এই রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব। এরই ধারাবাহিকতায় এবার ভোটের মাঠের জনপ্রিয়তা যাচাই করতে রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভপতি ওমর ফারুক চৌধুরীকে প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন গোদাগাড়ী উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের তিনবারের নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মো. আখতারুজ্জামান আখতার।
গত রোববার দিবাগত রাত ১টার দিকে নিজের পেইজে এমপি ওমর ফারুককে নিয়ে তীর্যক এই মন্তব্য করেন তিনি।
ফেসবুকে আখতারুজ্জামান আখতার জনপ্রিয়তা যাচাইয়ে বর্তমান এমপির (ওমর ফারুক) চেয়ে নিজে ১ ভোট কম পেলে তার গোলাম হয়ে থাকবেন বলে ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে তিনি (আখতার) তার (এমপি) চেয়ে ভোট কম পেলে কোনদিন ভোট করতে চাইবেন না বলেও তিনি উল্লেখ করেন। হঠাৎ করে নানা কারণে ‘বিতর্কিত’ রাজশাহীর এই এমপির বিরুদ্ধে ফেসবুকে এমন স্ট্যাটাসে পক্ষে-বিপক্ষে বিভিন্ন জন বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন।
সাবেক এই চেয়ারম্যান তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন- ‘সম্প্রতি দেওপাড়া ইউনিয়নের এক সভায় মাননীয় মহোদয় আমার জনপ্রিয়তা যাচাই করার জন্য বর্তমান চেয়ারম্যান সাহেবের সাথে ইউনিয়ন পরিষদের ভোটে অংশগ্রহণ করার জন্য বলছেন। উনার অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, আমি আর ইউনিয়ন পরিষদের ভোটে অংশগ্রহণ করবো না। আমি তিনবার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলাম। জনগনের প্রত্যক্ষ ভোটেই চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলাম। অবশ্য উনি আমার জয়লাভকে বিতর্কিত করার জন্য মাঝে মাঝেই বিতর্কিত কথা বলেন। অবশ্য উনি কিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন তা দেশবাসী জানেন। সম্প্রতি রাজশাহী জেলা পরিষদের নির্বাচনে ভোটের ফলাফল কি হয়েছিল আর কি হয়েছে তা উনি ভালোভাবেই জানেন। অবশ্য তা নিয়ে আদালতে মামলা আছে, আদালতেই তার ফয়সালা হবে।’
তিনি আরো উল্লেখ করেন, ‘আমি ইতোমধ্যে গোদাগাড়ী-তানোর আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী। তাতেই হয়তো উনার গাত্রদাহ। হ্যাঁ, যা বলছিলাম, আমি আর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন করবো না। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করাই আমার ইচ্ছা। তাই আমার চ্যালেঞ্জ/অনুরোধ, আমার জনপ্রিয়তা যাচাই, ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের সাথে নয়, মাননীয় মহোদয়ের সাথেই করতে চাই।’
প্রস্তবনা হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বেই উনার (ফারুক চৌধুরী) সাথে গোদাগাড়ী-তনোরের সম্মানিত ভোটারদের নিয়ে একটি জনপ্রিয়তা যাচাই ভোটে (দলীয় প্রতীক ছাড়া, অন্য যে কোন প্রতীকে) অংশগ্রহণ করতে চাই। সেখানে মাননীয় মহোদয়ের চেয়ে আমি একটি ভোট কম পেলে, উনার গোলাম হয়ে থাকবো এবং আর কোনদিন কোন ভোট করতে চাইবো না। আর উনি কম ভোট পেলে উনার কী করা উচিত তা জানতে চাই।’
এই বিষয়ে এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর মতামত জানতে সোমবার বিকালে তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ নেতা আখতারুজ্জামান আখতার বলেন, ‘আমি তিনবারের নির্বাচিত ইউনিয়ন চেয়ারম্যান। চেয়ারম্যানের পদ থেকে রিজাইন দিয়ে রাজশাহী জেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। নানা কারণে এমপি সাহেব বিতর্কিত। তাকে এলাকার জনগণ চায় না।’
জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘নতুন করে আসলে কিছু বলার নাই। এমপি ফারুক চৌধুরী নানা কারণেই বিতর্কিত। অধ্যক্ষকে মারধর করা, সভা-সমাবেশে প্রকাশ্যে অশ্লীল ভাষায় গালাগালসহ বিভিন্ন সময় উদ্ভট কর্মকাণ্ড ঘটিয়েই চলেছেন এমপি।’
জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী-০৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ দারা বলেন, ‘আমি কারো বিষয়ে কোনো মন্তব্য করবো না। তবে একটি বিষয় উল্লেখ করতে চাই, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে একজনকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছিলেন। কিন্তু আখতারুজ্জামান আখতার প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অমান্য করে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে হেরে গেছেন।’
স্বপ্নচাষ/একে
বাংলাদেশ সময়: ৫:৫৯ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
swapnochash24.com | sopnochas24
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ||||||
২ | ৩ | ৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ |
৯ | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ |
১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ |
২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ |
৩০ | ৩১ |